কাঁকসার অধিকাংশ মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই,বেহাল পঠনপাঠনের অভিযোগ


কাঁকসা ব্লকে রাজ্য সরকারের স্কুলগুলিতে পঠনপাঠনের অবস্থা বেহাল । বেসরকারি স্কুলগুলির রমরমা বাজার । যদিও এইসব বেসরকারি স্কুলগুলির শিক্ষক শিক্ষিকারা কতটা সরকারি স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকাদের থেকে পারদর্শী তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে অভিভাবকদের মধ্যেই । তবু শুধু সাধারন অভিভাবক নয় রাজনৈতিক নেতা বিশেষ করে একদিন যারা মাতৃভাষায় শিক্ষাদান নিয়ে বড্ড জোর গলাই চিল্লিয়েছিল তাদেরও দেখা গিয়েছে পিলপিল করে এসব বেসরকারি স্কুলের দরজায় হত্যে দিয়ে পড়তে । বাংলা মাধ্যমের সরকারি স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকাদের আপন সন্তানদের ভর্তি করছেন না সরকারি স্কুলে । এদের দেখা যাচ্ছে দুর্গাপুর শহরের দিল্লী বোর্ডের স্কুলগুলির গেটে মোটা রকম অর্থ খরচ করে পড়াতে । কিন্তু এমন অবস্থা কেন ? সেই বাম আমল থেকেই এটা হয়েছে ।

বিদ্যাসাগরের পদধূলি ধন্য গোপালপুর উচ্চ বিদ্যালয় বিতর্কের শিরোনামে এসেছিল । অনেক অভিভাবক থেকে শিক্ষা বিশেষজ্ঞ বলছেন স্কুলে স্কুলে প্রধান শিক্ষক নেই , চলছে স্কুল টিচার ইনচার্জ দিয়ে । কাঁকসা ব্লকের প্রায় অধিকাংশ স্কুলেই নেই স্থায়ী প্রধান শিক্ষক । এইসব স্কুল চলছে টিচার ইনচার্জ দিয়ে । বাম আমলে স্কুল পরিদর্শকের প্রভাব কমতে কমতে শুন্য হয়ে যায় আর বটগাছের মতো বেড়ে যায় স্কুল পরিচালন কমিটির ক্ষমতা । সেই ধারাবাহিকতা চলছে আজও তৃনমুল জমানাতেও । নাম প্রকাশে বহু শিক্ষক বলছেন বহু স্কুলের পরিচালন কমিটি নিজেদের অনুগামী টিচার ইনচার্জকে বসিয়ে স্কুলকে নিজেদের হাতে রেখেছেন । অভিযোগ উঠছে বেহাল হয়ে উঠছে স্কুলের পঠন পাঠন ব্যবস্থা ।
কাঁকসা ব্লকে এই মুহুর্তে প্রায় এক বছর কোথাও কোথাও আবার বছর দুই তিন ধরেই স্থায়ী প্রধান শিক্ষক নেই , স্কুল চলছে টিচার ইনচার্জ দিয়ে । বিদ্যাসাগর এসেছিলেন গোপালপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে যখন তিনি ছিলেন স্কুল পরিদর্শক । এই স্কুলে নেই স্থায়ী প্রধান শিক্ষক ।কাঁকসা ব্লকে ১১ টি স্কুলে নেই প্রধান শিক্ষক , রয়েছেন টিচার ইনচার্জ । এই স্কুলগুলি হল ১)গোপালপুর হাই স্কুল,২) পানাগড় বাজার হাই স্কুল,৩) পনাগড় রেলকলোনী হাই স্কুল ৪) সিলামপুর হাই স্কুল,৫) শোকনা নতুনগ্রাম সাগর লাহা হাই স্কুল,৬) প্যানাগড় বাজার হিন্দি হাই স্কুল,৭) পিয়ারিগঞ্জ চারুচন্দ্র হাই স্কুল,৮) রক্ষিতপুর হাই স্কুল,৯) অযোধ্যা হাই স্কুল,১০) চাকতেঁতুল হাই স্কুল।১১) কোটা চন্ডিপুর হাই স্কুল।

অন্যদিকে যেসব স্কুলে এখনো রয়েছেন প্রধান শিক্ষক সেগুলি হল ১)আমলাজোরা হাই স্কুল,২) কাঁকসা হাই স্কুল,৩) কাঁকসা গার্লস হাই স্কুল,৪) লবনা পাড়া হাই স্কুল ,৫)গোপালপুর গার্লস হাই স্কুল ৬)মলানদীঘি দুর্গাদাস বিদ্যামন্দির,৭)জামদহ হাই স্কুল,৮)বিরুডিহা হাই স্কুল,৯)ত্রিলোকচন্দ্র পুর জারিয়াল স্মৃতি ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক স্কুল শিক্ষক বলছেন বহু পরিচালন কমিটি স্থায়ী প্রধান শিক্ষকের জন্য আবেদন করেন নি । আর এই মুহুর্তে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগের জন্য পরীক্ষা বন্ধ হয়ে রয়েছে । নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন স্কুল পরিদর্শকের ক্ষমতা বাড়লেই স্কুলের পঠন পাঠন ব্যবস্থার হাল ফিরবে কিন্তু সেই বাম আমল থেকেই স্কুল পরিদর্শক নয় স্কুলের ভগবান হয়ে গিয়েছে স্কুল পরিচালন কমিটি আর এই কমিটি সবটাই ক্ষমতায় থাকা রাজনৈতিক দল দ্বারা পরিচালিত । নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক বলেন “ মেয়েকে একটি সরকারি স্কুলে ভর্তি করেছিলাম ক্লাস ইলেভেনে , পঠনপাঠন ব্যবস্থা বেহাল , ভুল করেছিলাম আমি সরকারি স্কুলে ভর্তি করে । এত ভাল শিক্ষক রয়েছে এসব স্কুলে কিন্তু ব্যবহার হচ্ছে না”।

জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধক্ষ্য বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন “নতুন দায়িত্ব পেয়েছি এবং পুরো বিষয়টা না জেনে মতামত দেওয়া অন্যায় । তবে চ্যালেঞ্জ নিয়ে বলছি কাঁকসা ব্লকের সব স্কুলের পঠনপাঠন ব্যবস্থা খুব ভালো এবং গ্রামীন এলাকায় সার্বিক ফল খুব ভালো মাধ্যমিক আর উচ্চমাধ্যমিকে”।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *