কর্মসূত্রে স্বামী থাকেন সৌদি আরবে। দুই শিশু সন্তান নিয়ে স্ত্রী থাকেন বাংলাদেশে। বাড়িতে মায়ের সঙ্গে রয়েছে ৮ বছরও ৫ বছরের দুই সন্তান। এই সুযোগে কাজ দেওয়ার নামে ফুঁসলিয়ে এ রাজ্যের নিষিদ্ধপল্লীতে ওই গৃহবধূকে বিক্রি করে দিয়েছে এক প্রতিবেশী মহিলা। এমন অভিযোগ নিয়ে বাংলাদেশ থেকে আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশের দ্বারস্থ হলেন বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জের বাসিন্দা মহম্মদ শাহিন। গত ৭ ডিসেম্বর সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশে ফিরে আসেন মহম্মদ শাহিন। এর মধ্যেই হঠাৎ করেই নিখোঁজ হয়ে যান শাহিনের স্ত্রী নাজমা আখতার (পরিবর্তিত নাম)। তিনি স্ত্রীর খোঁজে প্রথমে বাংলাদেশের ফতুল্লা থানায় অভিযোগ দায়ের করে। পুলিশের তৎপরতা না দেখে নিজেই খোঁজ নিতে নেমে পড়েন। জানতে পারেন স্থানীয় শেফালী ওরফে রিয়া (পরিবর্তিত নাম) তাঁর স্ত্রীকে কানাডায় নিয়ে যাওয়ার নামে প্রলোভন দেন।
যুবকের কথায়, প্রথমে ভারতে পাসপোর্ট তৈরি করানো হয়। শেফালি তাঁর স্ত্রী নাজমাকে পশ্চিমবঙ্গের কোথাও নিয়ে গেছে তা সূত্র মারফত জানতে পারেন মহাম্মদ শাহিন। হাল না ছেড়ে খোঁজ নিতে নিতে আসানসোলের নিষিদ্ধপল্লী লচিপুরে পৌঁছে যান তিনি। গ্রাহক সেজে স্ত্রীর কাছ পর্যন্ত পৌঁছে যান তিনি। আরও জানতে পারেন, তাঁর স্ত্রীকে দেহ ব্যবসায় নামিয়েছে প্রতিবেশি শেফালি। এরপর আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারের কাছে তিনি অভিযোগ দায়ের করেন। শেফালিকে গ্রেফতারের দাবিতে এবং স্ত্রীকে উদ্ধারের আবেদন করেন। বাংলাদেশের হাইকমিশনারের কাছেও তিনি একই অভিযোগ জানান। এরপর আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশের কুলটি থানা দ্রুততার সঙ্গে বাংলাদেশি ওই দালাল মহিলা শেফালিকে গ্রেফতার করে এবং নাজমা আখতারকে উদ্ধার করে। অভিযোগের ভিত্তিতে শেফালিকে ও নাজমার বৈধ কাগজপত্র না থাকায় অনুপ্রবেশকারী হিসেবে দুজনকেই গ্রেফতার করে।
এই পরিস্থিতিতে মহম্মদ শাহিন তার স্ত্রীকে আইনি জটিলতা কাটিয়ে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চান। সমাজ যদি মেনে না নেয় তবে তিনি তার স্ত্রীকে নিয়ে নতুন জায়গায় সংসার করবেন বলেও জানিয়েছেন। আর সেই আশাতে গত ১৪ ডিসেম্বর থেকে শাহীন আসানসোল আদালত ও পুলিশের দরজায় দরজায় চক্কর কাটছেন।
যদিও ধৃত ওই দালাল বাংলাদেশের নয় বলে পুলিশ দাবি করেছে। বর্তমানে দু’জনই আসানসোল জেল বা বিশেষ সংশোধনাগারে আছে। তবে,উদ্ধার হওয়া ওই মহিলা তাঁর স্বামীর করা অভিযোগ অস্বীকার করেন।
তিনি পুলিশকে পাল্টা জানিয়েছেন স্বামী তার উপর শারীরিক নির্যাতন করত। পুলিশ জানায়, ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে। অন্যদিকে আসানসোল জেল সূত্রে জানা যায়, এই মুহুর্তে জেলে চারজন বাংলাদেশি রয়েছেন। এছাড়াও জেলে আছেন এক রোহিঙ্গাও।