সাপের কামড়ে ছাত্রমৃত্যুর পর বিক্ষোভ অভিভাবকদের


কিন্তু পরিচর্যা হয় না বিদ্যালয়ের। এমনটাই অভিযোগ অভিভাবকদের। তাঁদের দাবি, জঙ্গলে মুখ ঢেকেছে আবাসিক বিদ্যালয়। আর এখানেই আস্তানা সাপেদের। আর সেই সাপের ছোবলেই প্রাণ গিয়েছে ওই নাবালকের। অভিযোগ, আবাসিক স্কুল কর্তৃপক্ষের চরম উদাসীনতার জন্যই মৃত্যু হয়েছে তাঁর ।মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে আদিবাসী সমাজের ছেলে মেয়েদের শিক্ষার জন্য তৈরি হয়েছিল বিদ্যালয়। কিন্তু পরিচর্যার অভাবে সেই স্কুলেরই এখন বেহাল দশা। আগাছা ও জঙ্গলে ঘেরা এই স্কুলে নাকি বাড়ছে সাপের উৎপাত। চলতি মাসে এক ছাত্রের মৃত্যু পর্যন্ত হয়েছে সাপের ছোবলে। অভিভাবকদের দাবি, বিদ্যালয়ে ছেলে মেয়েদের পাঠাতে কার্যত ভয় পাচ্ছেন তাঁরা। তাই আগাছা কেটে জঙ্গল পরিষ্কারের দাবিতে পথে নামলেন অভিভাবকরা। কার্যত তালা মেরে বিক্ষোভ দেখালেন তাঁরা। সালটা ২০০৫। পিছিয়ে পড়া আদিবাসী সমাজের ছেলে মেয়েদের শিক্ষার জন্য পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুরে নিউটাউনশিপ থানার অন্তর্গত ফুলঝোড় মোড়ের কাছে পণ্ডিত রঘুনাথ মুর্মু আবাসিক বিদ্যালয় তৈরি হয়েছিল। খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০১৪ সালে উদ্বোধন করেছিলেন ছাত্রাবাসের। তাঁর স্বপ্ন ছিল অনগ্রসর শ্রেণির পড়ুয়াদের শিক্ষার সুযোগ করে দেওয়া। শুধু দুর্গাপুর নয়, বাঁকুড়া, পূর্ব বর্ধমান থেকেও একপ্রকার নিখরচায় এই আবাসিক বিদ্যালয়ে পড়তে আসে পড়ুয়ারা। কিন্তু পরিচর্যা হয় না বিদ্যালয়ের। এমনই অভিযোগ অভিভাবকদের। তাঁদের দাবি, জঙ্গলে মুখ ঢেকেছে আবাসিক বিদ্যালয়। আর এখানেই আস্তানা সাপেদের। আর সেই সাপের ছোবলেই প্রাণ গিয়েছে ওই নাবালকের। অভিযোগ, আবাসিক স্কুল কর্তৃপক্ষের চরম উদাসীনতার জন্যই মৃত্যু হয়েছে তাঁর ।

আর এই ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার সকাল থেকে উত্তেজিত অভিভাবক ও আদিবাসী গাউতার পক্ষ থেকে বিদ্যালয়ের ভিতরে শিক্ষক শিক্ষিকাদের আটকে দিয়ে তুমুল বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। তাদের দাবি, যতক্ষণ না পর্যন্ত প্রশাসনিক কর্তারা আসছেন, লিখিত প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন ততক্ষণ তাঁরা এই আন্দোলন জারি রাখবেন। মৃত্যুর দায় সরকারকেই নিতে হবে বলে অভিযোগ করেন তাঁরা। এই বিষয়ে আবাসিক বিদ্যালয়ের টিচার ইন চার্জ শ্রাবণী সেনশর্মা জানিয়েছেন, তিনি অসহায়। ফান্ড চেয়েও পাওয়া যায়নি। তাহলে কাজটা হবে কীভাবে প্রশ্ন তুলেছেন। মহকুমা প্রশাসন আধিকারিক দীপক সরকার বলেন, “স্যার পাঠিয়েছেন। অভিভাবকদের দাবি পূরণ করা হবে।” অভিভাবক ময়না হেমব্রম বলেন, “এত জঙ্গলের মধ্যে আমরা ছেলে মেয়েদের কোন ভরসায় রাখব? নামেই আবাসিক বিদ্যালয়। কোনও উন্নতি তো দেখতে পাচ্ছি না।”
আজ বিক্ষভের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে দুর্গাপুরের নিউটাউনশিপ থানার পুলিশ ও মহকুমা প্রশাসনের পদস্থ আধিকারিকরা। সবপক্ষকে নিয়ে বৈঠক করে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন মহকুমা প্রশাসনের আধিকারিকরা। এরপরেই বিক্ষোভ প্রত্যাহার করেন বিক্ষোভকারীরা।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *