সিঙ্গুর নিয়ে বড় ধাক্কা। টাটাকে সুদ সহ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ রাজ্যকে। ন্যানো বিদায়ের ১৫ বছর পর সিঙ্গুরে বড় ধাক্কা রাজ্যের। সিঙ্গুরে টাটা ন্যানো ফ্যাক্টরি না হওয়ায় টাটাকে সুদসহ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে ওয়েস্ট বেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেড বা ডব্লুবিআইডিসি-কে। টাটা জানিয়েছে, তাদের পক্ষে সর্বসম্মত রায় দিয়েছে মধ্যস্থতাকারী ট্রাইবুনাল। সুদ ছাড়া সেই টাকার পরিমাণ ৭৬৫ কোটি ৭৮ লক্ষ টাকা। ২০১৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে যতক্ষণ না ক্ষতিপূরণ দেওয়া হচ্ছে সেই মোতাবেক ১১ শতাংশ হারে সুদ সহ ৭৬৫ কোটি ৭৮ লক্ষ টাকা দিতে হবে। পাশাপাশি মামলার খরচ বাবদ ১ কোটি টাকাও দিতে হবে রাজ্যকে, এমনটাও জানিয়ে দেওয়া হয়। প্রসঙ্গত, ২০০৬ সালে সপ্তম বামফ্রন্ট সরকারের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার দিনেই রতন টাটাকে পাশে নিয়ে সিঙ্গুরে ছোট গাড়ি তৈরির কারখানার কথা ঘোষণা করেছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। ২০০৭ সালে সিঙ্গুরে টাটার কারখানা তৈরির কাজ শুরু হয়। আর সেই সময়ই জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে কৃষকদের ক্ষোভকে হাতিয়ার করেই ময়দানে নামে বিরোধী দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গোটা দেশের রাজনীতিকে নাড়িয়ে দিয়েছিল এই সিঙ্গুর আন্দোলন। শেষমেষ ২০০৮ সালের ৩ অক্টোবর বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর সঙ্গে বৈঠকের পর সিঙ্গুর থেকে সরে যাওয়ার কথা ঘোষণা করেন রতন টাটা। এরপর থেকেই জমি নিয়ে আইনি টানাপোড়েন জারি ছিল। এরপর ২০১১ সালে ক্ষমতায় এসে প্রথম মন্ত্রিসভার বৈঠকেই সিঙ্গুরে জমি ফেরানোর সিদ্ধান্ত নেয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর, সিঙ্গুরে গিয়ে জমি ফিরিয়ে দেন মমতা। ভেঙে ফেলা হয় টাটার কারখানার কাঠামো। এদিকে, যখন জমি নিয়ে আইনি টানাপোড়েন চলছে, তখনও রতন টাটা স্পষ্ট জানিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে খুবই সম্মান করি। বিশ্বাস করি পশ্চিমবঙ্গের শিল্পায়নের জন্য তিনি আগ্রহী ছিলেন। সিঙ্গুরে কারখানা হলে ৭ থেকে ৮ হাজার চাকরি হত। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য চেয়েছিলেন টাটা গোষ্ঠী থাকুক। তার জন্য তিনি নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করারও আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশ দিয়ে কারখানা চালানো যায় না। যদিও সিঙ্গুর থেকে টাটাদের বিদায় নিয়ে পঞ্চায়েত ভোটের আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছিলেন, টাটাকে আমি তাড়াইনি, তাড়িয়েছে সিপিএম। তবে এই মধ্যস্থতাকারী ট্রাইবুনালের রায়ের পর কোন পথে হাঁটে রাজ্য সরকার সেদিকেই তাকিয়ে ওয়াকিবহাল মহল।