ভগবানের অদ্ভুত গণিত


একবার দুই ব্যক্তি সারাদিন পরিশ্রমের পর এক মন্দিরের চাতালে বসে গল্প করছিল। সে অনেক কথা। তার মধ্যে পথ চলতি আর এক ব্যক্তি এসে বসলো গল্পের আড্ডায়। গল্প করতে করতে অনেক সময় পার হয়ে গেল। আবার মুষল ধারে বৃষ্টিও এলো। তখন কেউই আর যেতে পারলোনা নিজের বাড়ি। এদিকে খিদে পেয়ে গেছে।

১ম জন বলল , আমার কাছে তিনটে রুটি আছে।

২য় জন বলল আমার কাছে ৫টা রুটি আছে।

৩য় জন বললো আমার কাছে তো কিছু নেই।

তখন দুজন বললো তাতে কি আছে। আমরা ভাগ করে খাবো এই ৮টা রুটি।

কিন্তু ৮ টা রুটি সমান তিন ভাগে কি করে ভাগ করা যাবে ?

৩য় ব্যক্তিটি বললে , প্রতিটা রুটি কে তিন টুকরো করো। তাহলে ৮টা রুটিতে ২৪ টুকরো হবে। তখন আমরা তিনজন ৮ টুকরো করে খেতে পারবো।

তাই করা হলো।

প্রত্যেকে ৮ টুকরো রুটি খেয়ে মন্দিরেই শুয়ে পড়ল।
সকাল হলে প্রথম দুজন দেখলো ৩য় ব্যক্তিটি চলে গেছে এবং তাদের মাথার কাছে ৮টা গিনি রেখে গেছে।

ব্যক্তি দুজন তো খুব খুশী হলো।

১ম ব্যক্তি ঠিক করলো দুজনে ৪টে করে গিনি ভাগ করে নেবে।

২য় ব্যক্তি বললো, তা কি করে হবে?

তোমার ছিল ৩টে রুটি আর আমার ছিল ৫টা রুটি। তাহলে আমি ৫টা গিনি নেব আর তুমি ৩টে গিনি নেবে।

এই ভাবে দুজনেই সমাধানে আসতে না পেরে সামনে পূজারীজীকে দেখে বলল,
আপনি সমস্যার সমাধান করে দিন।

পূজারীজী বললেন ,
আপনাদের দুজনের কথাই ঠিক, হয় সমান ভাগ নয়তো ৫ ও ৩ টে গিনি হিসাবে ভাগ।

ব্যক্তি দুজন দেখলো এ সমাধান করা পূজারীজীর কাজ নয়।

তখন তারা বললো ,
আপনার ঠাকুরজী কে বলুন এর সমাধান করে দিতে।
তিনি যা সমাধান করবেন তাই মেনে নেবো।

পূজারীজী মন্দিরে প্রবেশ করে ঠাকুরজীর চরণে ৮টা গিনি রাখলেন।
আর দুই ব্যক্তির নাম দুপাশে লিখে দিলেন। বললেন প্রভু তুমি ন্যায় কোরো।

কিছু সময় পর মন্দিরের দরজা খুলে পূজারীজী অবাক হয়ে দেখলেন ১ম ব্যক্তির নামের পাশে ১টা গিনি আর ২য় নামের পাশে ৭টা গিনি।

অবাক হয়ে প্রভুকে বললেন ,
এ তোমার কিরকম ন্যায় হলো ?
আমি ওদের কি বলে বোঝাবো ?

ঠাকুরজী হেসে বললেন ,
১ম ব্যক্তির ছিল ৩টে রুটি। তার ৯ টুকরো হয়েছিলো।

সে তার থেকে নিজে ৮ টুকরে খেয়ে ছিল ও ৩য় ব্যক্তিকে ১ টুকরো দিয়েছিল। তাই তার ভাগে ১ টা গিনি।

২য় ব্যক্তি র ৫টি রুটি ছিল। তার ১৫ টুকরো হয়েছিলো। সে তার থেকে ৮ টুকরে খেয়ে ৭ টুকরো ৩য় ব্যক্তিকে দিয়েছিল। তাই তার ৭টা গিনি
পাওনা।

পূজারীজী যখন ঐ দুই ব্যক্তিকে ঠাকুরজীর গনিতের কথা বললেন তখন নত মস্তকে তারা তা স্বীকার করে নিল।

আসলে আমাদের ভাগে ভগবান যা লিখে রাখেন তার কতটা আমরা নিজে ভোগ করি ও কতটা অপরকে দান করি বা সাহায্য করি তার ওপর ই আমাদের আগামী দিনের পাওনা নির্ভর করে।
যতটা দেবে তুমি , ভগবানের কাছ থেকে ততটাই পাবে।
🙏🌷🙏
@ অমিত সাহারায় মহাশয়ের নিবেদন,সবার হিসাব সবসময় মেলে না,যিনি আছেন সবার অগোচরে,তার হিসাব ই অভ্রান্ত,🙏🏻🌹🍂


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *